২০ টি জনপ্রিয় সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইট
মানুষ সামাজিক জীব। সে জন্যই মানুষ তাদের মতামত, আইডিয়া শেয়ার করার সোশ্যাল মিডিয়া বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তৈরি করতেছে এবং সেগুলোতে অংশগ্রহণ করতেছে। ইন্টারনেট এর অগ্রগতির সাথে সাথে মানুষ দেশ এবং দেশের মানুষের সাথে অনলাইন কমিউনিটি, ফোরাম গড়ে তুলেছে।বর্তমানে মোটামুটি সব মানুষই সোশ্যাল নেটওয়ার্ক বলতে "ফেসবুক" কে বুঝে। কিন্তু এর বাইরেও আরও অনেক সোশ্যাল নেটওয়ার্ক রয়েছে। আজ আমি আপনাদের সাথে তেমনি জনপ্রিয় ২০ টি সোশ্যাল নেটওয়ার্ক এর কথা জানাব।
২০ টি জনপ্রিয় সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইট লিস্ট
১। ফেসবুক - Facebookআগেই উল্ল্যেখ করেছি, মোটামুটি প্রত্যেক ইন্টারনেট ইউজার এর কাছেই ফেসবুক একটি পরিচিত নাম। ফেসবুক এমন একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেখানে কয়েকশ মিলিয়ন লোক তাদের চিন্তা ভাবনা শেয়ার করার জন্য কানেক্টেড হয়। ফেসবুক এ সাইন আপ করার পর ইউজার তার প্রোফাইল তৈরী করা সহ ছবি আপলোড, ভিডিও আপলোড এবং চ্যাট করতে পারে। এছাড়াও বিভিন্ন পেজ এবং গ্রুপ এর মাধ্যমেও কমিউনিটি বিল্ড আপ করার সুযোগ থাকে।
২। টুইটার - Twitter
টুইটার ও একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। আপনারা অনেকেই এটির ব্যাপারে জানেন তবে এটি ফেসবুক থেকে টোটালি আলাদা। এখানে আপনি খুবই সংক্ষিপ্ত আকারে (১৪০ ক্যারেক্টার) আপনার মতামত জানাতে পারবেন। টুইটার কমিউনিটি গড়ে তোলার উপায় হচ্ছে আপনি কাউকে ফলো করবেন এবং অন্যরা আপনাকে ফলো করবে। টুইটার এর একটি বিশেষ ফিচার হচ্ছে হ্যাশট্যাগ। আপনি হ্যাশট্যাগ ইউজ করে নির্দিষ্ট একটা টপিক এর উপর টুইট করতে পারবেন অথবা টুইট খুঁজতে পারবেন।
৩। ইউটিউব - Youtube
যদিও ইউটিউবকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করা হয় না কিন্তু এটি আসলে একটি সামাজিক যোগাযোগ এরও মাধ্যম। আমরা সবাই এটিকে ভিডিও শেয়ারিং সাইট হিসেবেই জানি। আপনি ইউটিউবে ভিডিও দেখার পাশাপাশি ভিডিও শেয়ার করতে পারবেন, ভিডিও আপলোড করতে পারবেন, লাইক, কমেন্ট করতে পারবেন।
৪। লিংকডইন - LinkedIn
এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি ডিজাইন করা হয়েছে মূলত প্রফেশনালদের জন্য। এখানে মূলত বিভিন্ন প্রফেশন এর মানুষদের মধ্যে ইন্টারঅ্যাকশন হয়। লিংকডইন প্রোফাইল টা তৈরী হয় মূলত আপনার ক্যারিয়ার, জব, পড়াশুনা এবং স্কিল এর উপর ভিত্তি করে। অনেকেই এখন সিভি পাঠানোর পরিবর্তে তার লিংকডইন প্রোফাইল সেন্ড করে থাকে।
৫। গুগল প্লাস - Google Plus
গুগল প্লাস নতুন সোশ্যাল নেটওয়ার্কগুলোর মধ্যে অন্যতম। গুগল ২০১১ সালে এটি শুরু করে এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যেই এটি অনেক জনপ্রিয়তা পায়।
৬। ইন্সটাগ্রাম - Instagram
ইন্সটাগ্রামকেও অনেকটা নতুন সোশ্যাল নেটওয়ার্ক বলা চলে। এটি ২০১০ সালে এর যাত্রা শুরু করে। ইন্সটাগ্রাম মূলত একটি স্মার্টফোন এপ্লিকেশন। এখানে আপনি ছবি আপলোড করতে পারবেন, ছবিতে ডিজিটাল ফিল্টার এড করতে পারবেন এবং তারপর অন্য ইন্সটাগ্রাম ইউজার অথবা অন্য সোশ্যাল নেটওয়ার্ক এ শেয়ার করতে পারবেন। অবশ্য ২০১২ সালে ফেসবুক এটি কিনে নেয়।
৭। পিন্টারেস্ট/পিনারেস্ট - Pinterest
পিন্টারেস্ট একটি ইউনিক সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইট। এখানে আপনার একটি ভার্চুয়াল পিনবোর্ড থাকবে যেখানে আপনি ইমেজ কালেকশন ক্রিয়েট করা, ম্যানেজ করা এবং শেয়ার করতে পারবেন।
৮। ইয়েল্প - Yelp
ইয়েল্প আরও একটি ইউনিক সোশ্যাল নেটওয়ার্ক। এটি ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটা আপনাকে লোকাল বিজনেস, যেমন, রেস্টুরেন্ট, হেয়ার সেলুন, সুপারশপ খুঁজে পেতে সাহায্য করে। অবশ্য বাংলাদেশ এ এর তেমন একটা প্রচলন নেই।
৯। সাউন্ডক্লাউড - SoundCloud
সাউন্ডক্লাউড একটি অনলাইন ভিত্তিক সাউন্ড শেয়ারিং সাইট। আপনি এখানে মিউজিক অথবা অডিও রেকর্ড করতে পারবেন, আপলোড করতে পারবেন এবং আপনার তৈরী করা অডিও অথবা মিউজিক শেয়ার করতে পারবেন।
১০। ফ্লিকার - Flickr
ফ্লিকার হচ্ছে অনলাইন ফটো শেয়ারিং এবং ইমেজ/ভিডিও হোস্টিং সার্ভিস সাইট। এখানে আপনি আপনার ছবি/ভিডিও আপনার ফ্রেন্ড অথবা অন্য যে কারো সাথে শেয়ার করতে পারবেন, আপনার মত করে ছবিগুলো সাজিয়ে রাখতে পারবেন। আর আপনি চাইলে অন্যান্য যে কারো ছবিও দেখতে পাবেন।
আরও ১০ টি জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম
১১। বাডু - Badoo
বাডু ২০০৬ সালে এর কার্যক্রম শুরু করে। এবং আজ এটি অন্যতম বড় একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। এটি মূলত ডেটিং ফোকাসড অনলাইন সার্ভিস। আপনি এখানে অন্যদের সাথে চ্যাট করতে পারবেন, ডেট ফিক্সড করতে পারবেন, অন্যদের ছবিতে রেটিং দিতে পারবেন। এটি নিয়ে অনেক সমালোচনাও আছে। আর বাংলাদেশ এ এর প্রচলন আছে কিনা আমার জানা নেই।
১২। ফ্লিক্সস্টার - Flixster
ফ্লিক্সস্টার এমন একটি অনলাইন সার্ভিস যেখানে আপনি সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং এর পাশাপাশি মুভি রিভিউ করতে পারবেন। একজন ফ্লিক্সস্টার ইউজার হিসেবে আপনি মুভি রিভিউ দিতে পারবেন, নতুন নতুন মুভি ডিসকভার করতে পারবেন, বিভিন্ন মুভি সম্পর্কে জানতে পারবেন।
১৩। ক্লাসমেটস - Classmates
ক্লাসমেটস অন্যতম পুরানো একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। এটি ১৯৯৫ সালে এর যাত্রা শুরু করে। এটি মূলত ইউজারদের স্কুল, কলজে, ইউনিভার্সিটির ফ্রেন্ডদের সাথে কানেক্ট থাকার জন্য শুরু হয়। প্রথম দিকে এটি শুধু আমেরিকার মানুষ ইউজ করত। পরে এটি সারাবিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে।
১৪। মাইস্পেস - Myspace
মাইস্পেস ২০০৩ সালে এর কার্যক্রম শুরু করে। প্রথম দিকে এটি ছিল সবচেয়ে বেশি ভিজিট করা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। পরে আস্তে আস্তে এর জনপ্রিয়তা কমতে শুরু করে।
১৫। ডেভিয়েন্টআর্ট - deviantART
ডেভিয়েন্টআর্ট ২০০০ সালে শুরু হয়। এই অনালাইন যোগাযোগ মাধ্যমটি শুরু হয় মূলত আর্টিস্ট এবং আর্ট লাভারদের জন্য। এই সম্পর্কিত এটিই সবচেয়ে বড় অনলাইন সাইট। এখানে আর্টিস্টরা তাদের কাজ শোকেস এর মত সাজিয়ে রাখতে পারে, তারা তাদের কাজ সম্পর্কে আলোচনা করতে পারে।
১৬। ফোরস্কয়ার - foursquare
ফোরস্কয়ার লোকেশন বেইজড সোশ্যাল নেটওয়ার্ক। এটি মূলত স্মার্টফোন এবং মোবাইল ব্যবহারকারীদের জন্য তৈরী করা হয়। এর বিশেষ ফিচার হল "চেক ইন"। এই এপস আপনাকে আপনার নিকটবর্তী ভাল ভাল প্লেসগুলো সাজেস্ট করবে।
১৭। কিউজোন - Qzone
কিউজোন একটি চাইনিজ নেটওয়ার্ক যা টেনসেন্ট নামক একটি কোম্পানী ২০০৫ সালে শুরু করে। এর ইউজাররা এখানে ব্লগ তৈরী করা, ভার্চুয়াল ডায়রী লেখা, বন্ধুদের কাছে ছবি পাঠানো সহ মিউজিক শুনতে পারে।
১৮। হাবু - Haboo
২০০০ সাল থেকে হাবু শুরু হয় এবং এটি ফিনল্যান্ড ভিত্তিক একতি সামাজিক যোগাযোগ এর মাধ্যম। এটি মূলত টিনেজারদের টার্গেট করে তৈরী করা হয়েছে। এটি প্রাইভেসী ইস্যুর কারণে একবার বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। পরে ইস্যু সল্ভ হওয়ার পর আবার রিস্টার্ট করে।
১৯। হাইফাইভ - hi5
হাইফাইভ আরও একটি জনপ্রিয় অনলাইন যোগাযোগ মাধ্যম যা ২০০৩ সালে শুরু হয়। এর ফিচারগুলো অন্যান্য সামাজিক সাইটগুলোর মতই। এটি প্রথমদিকে শুধু আমেরিকাতে চলত পরে এটি ল্যাটিন আমেরিকা এবং মংগোলিয়ার দিকেও জনপ্রিয়তা পায়।
২০। ভিমিও - Vimeo
ভিমিও হচ্ছে একটি ভিডিও শেয়ারিং সাইট। এর ফিচারগুলো অনেকটা ইউটিউব এর মত। এর ইউজাররা এখানে ভিডিও দেখার পাশাপাশি ভিডিও শেয়ার করতে পারে, ভিডিও আপলোড করতে পারে। এটি মাত্র ২টি ভাষায় এভেইলএবল ইংলিশ এবং স্প্যানিশ। তারপরও এটি খুবই জনপ্রিয় একটি ভিডিও শেয়ারিং সাইট।
এই ছিল ২০ টি জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম
আরও পড়ুন-
পোস্টটি কেমন লেগেছে কমেন্ট করে আপনার মতামত জানান। ভাল লাগলে আপনার ফেসবুক ওয়ালে শেয়ার করে বন্ধুদের দেখার সুযোগ দিন।
0 Comments